NewsPolitics

ভেজাল ওষুধ নিয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে অখুশি রাজ্য

জিৎ দত্ত,মানুষের মতামত:জাল ওষুধ চক্রে রাশ টানতে উঠে পড়ে লেগেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু তদন্তে সহযোগিতা করছে না বিজেপি শাসিত যোগী সরকারের প্রশাসন—এই অভিযোগেই ফের উত্তরপ্রদেশ সরকারকে চিঠি দিতে চলেছে রাজ্য। সূত্রের খবর, কিছুদিন আগেই পশ্চিমবঙ্গে আসা একাধিক ওষুধের চালানে জালিয়াতির প্রমাণ মেলায়, উত্তরপ্রদেশ সরকারকে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছিল নবান্ন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যেটুকু উত্তর এসেছে, তা অত্যন্ত অস্পষ্ট এবং অসন্তোষজনক বলেই মনে করছে রাজ্য। আর তাতেই একরকম ক্ষুব্ধ নবান্ন। নবান্ন মনে করছে মানুষের জীবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিষয় চিঠি দেওয়া হলেও একরকম দায়সারা গোছাই জবাব দিয়ে নিজেদের দায় সাড়তে চাইছে ওই রাজ্য। সে কারণেই আরো একবার চিঠি দিয়ে এর গুরুত্বের বিষয় সতর্ক করতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

রাজ্য সরকারের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, “কলকাতায় বাসে করে যে সব জাল ওষুধ এসেছে, তার একটা বড় অংশের উৎসস্থল মূলত বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং ওড়িশা। তদন্তে উঠে এসেছে, যোগীরাজ্যের একাধিক সংস্থার নাম। এই অবস্থায় কোন কোন জায়গা থেকে এই চোড়া চালানগুলি এসেছে এবং কোন কোন সংস্থা জড়িত—তা বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছিল যোগী সরকারের কাছ থেকে। কিন্তু কিন্তু দুঃখের বিষয় এই নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া “প্রায় নেই বললেই চলে”।

একই সঙ্গে রাজ্যের দেওয়া চিঠিতে ভেজাল ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা চিহ্নিত হলে লাইসেন্স বাতিল–সহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানানো হয়েছিল৷ জবাবি চিঠিতে পশ্চিমবঙ্গের তোলা প্রশ্নের নির্দিষ্ট কোনও জবাবই বস্তুত দেয়নি উত্তরপ্রদেশ ড্রাগ কন্ট্রোল। পশ্চিমবঙ্গ ড্রাগ কন্ট্রোল নিশ্চিত, যে সংস্থাগুলির নাম উঠে এসেছে, অন্য অনেক রাজ্যেও তারা ভেজাল ওষুধ সরবরাহ করে। অনেক সময়ে দেখা গিয়েছে, কলকাতায় কোনও জাল ওষুধ নির্দিষ্ট কয়েকটি ডিস্ট্রিবিউটারকে সরবরাহ করা হলেও এ রাজ্যের বাজারে তা বিক্রি হয়নি। পাঠানো হয়েছে ভিন রাজ্যে।

এই পরিস্থিতিতে এবার রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল দফতর অন্যান্য রাজ্যের সমতুল সংস্থার কাছ থেকেও সাহায্য চাইবে বলে ঠিক হয়েছে। জাল ওষুধের আন্তঃরাজ্য চক্র ভেঙে দিতেই এই উদ্যোগ।

এদিকে, ইতিমধ্যেই কলকাতার চারটি ওষুধের দোকানে হানা দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ড্রাগ কন্ট্রোলের আধিকারিকরা। এই কর্মকাণ্ডে প্রচুর জাল ওষুধ ধরা পড়ে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রচুর পরিমাণে জাল ওষুধ উদ্ধারের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে জনমানসে। তাই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ডিরেক্টরেট অফ ড্রাগ কন্ট্রোল একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে—০৩৩ ২২২৫ ২২১৩ / ০৩৩ ২২২৫ ২২১৪—যেখানে সন্দেহভাজন ওষুধের খবর সরাসরি দেওয়া যাবে।

এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মুখপাত্রদের বক্তব্য, যখন দেশে ওষুধ নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা—সিডিএসসিও (CDSCO), তখন কী করে এত বিপুল পরিমাণে ভেজাল ওষুধ বাজারে ছড়িয়ে পড়ল? তাদের আরও প্রশ্ন, সিডিএসসিও-র অনুমোদন ছাড়া কোনও ওষুধ বাজারে বিক্রি করা যায় না—তাহলে এই নজরদারির ব্যর্থতার দায় কে নেবে?

Share with

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *