“২৬ হাজার চাকরির সর্বনাশ, একমাত্র দায় মুখ্যমন্ত্রীর”—বিরোধী দলনেতার তোপ
নিজস্ব সংবাদদাতা,মানুষের মতামত:সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সোমবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে চাকরি হারানো প্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন তিনি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপকে ভণ্ডামি বলেই ব্যাখ্যা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বিধানসভা চত্বরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দুর অভিযোগ, “যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের দুরবস্থার জন্য একমাত্র দায়ী মুখ্যমন্ত্রী নিজে। এসএসসি-র স্বায়ত্তশাসন ভেঙে তিনি যে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করেছেন, তার ফলেই আজ এই বিপর্যয়।”
এ দিন নেতাজি ইনডোরে বহু যোগ্য প্রার্থী ঢোকার সুযোগ পাননি বলেও অভিযোগ উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগও পাননি অধিকাংশ চাকরি হারা। শুভেন্দুর কটাক্ষ, “যাঁরা সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী, তাঁদের কথা শুনতেই চাননি মুখ্যমন্ত্রী। ন্যায্য বিচার থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা হয়েছে।”
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি পুরনো রায়ের কথা তুলে শুভেন্দু বলেন, “ছ’হাজার অযোগ্য প্রার্থীর তালিকা যদি মেনে নেওয়া হতো, তাহলে আজ বাকি ২০ হাজার চাকরিপ্রার্থীকে এই দুর্দশায় পড়তে হতো না। কিন্তু সেই পথে না গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অযোগ্যদের আড়াল করেছেন।”
শুভেন্দুর দাবি, যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা কখনও আদালতে পেশ করেনি রাজ্য সরকার বা এসএসসি। এমনকি প্রয়োজনীয় ওএমআর শিটও নষ্ট করা হয়েছে ইচ্ছাকৃত ভাবে। “সিবিআই গাজিয়াবাদ থেকে হার্ডডিস্ক উদ্ধার না করলে আজও সত্য সামনে আসত না,” মন্তব্য শুভেন্দুর।
তিনি বলেন,“বিচারব্যবস্থার কাছে রাজ্য সরকার বারবার সময় চেয়েছে। তিন বছর সময় পাওয়ার পরেও যোগ্যদের চাকরি ফেরানোর কোনো সদিচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর ছিল না। তিনি দায় এড়াতে পারেন না।”
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতায় এলে এক মাসের মধ্যে যোগ্যদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। “যদি শিখ দাঙ্গার বিচার হতে পারে, তবে এসএসসি দুর্নীতিরও বিচার হবে,” বলেন শুভেন্দু।
আগামী ২১ এপ্রিল বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা নবান্ন অভিযান করবেন বলে ঘোষণা করেছেন। শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি, “১৫ এপ্রিলের মধ্যে যদি যোগ্য তালিকা প্রকাশ না হয়, তবে লক্ষ মানুষ পতাকা ছাড়াই নবান্ন ঘেরাও করবেন। প্রয়োজনে আমরাও থাকব তাঁদের সঙ্গে।”