সিপিএম-এর নতুন সাধারণ সম্পাদক এম.এ বেবি,প্রথম সংখ্যালঘু প্রতিনিধি হিসেবে ইতিহাস গড়লেন
জিৎ দত্ত,মানুষের মতামত:কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া (মার্কসবাদী)-এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হলেন কেরালার বর্ষীয়ান নেতা মারিয়াম আলেকজান্ডার বেবি, যিনি এম এ বেবি নামে পরিচিত। মাদুরাইয়ে অনুষ্ঠিত পার্টির ২৪তম কংগ্রেসে ৬ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে সর্বসম্মতভাবে তাঁকে দলের শীর্ষ নেতৃত্বে নির্বাচিত করা হয়। তিনি সিপিএম-এর ইতিহাসে ষষ্ঠ সাধারণ সম্পাদক, এবং প্রথম সংখ্যালঘু প্রতিনিধি হিসেবে এই পদ অলঙ্কৃত করলেন। পাশাপাশি,তিনি কেরালার দ্বিতীয় নেতা যিনি এই পদে অধিষ্ঠিত হলেন—ই এম এস নাম্বুদিরিপাদের পরে।
১৯৫৪ সালের ৫ এপ্রিল কেরালার কোল্লাম জেলার প্রাক্কুলামে জন্ম এম এ বেবির। তাঁর পিতা-মাতা ছিলেন পি এম আলেকজান্ডার ও লিলি আলেকজান্ডার। ছাত্রজীবনে প্রাক্কুলাম এনএসএস হাইস্কুলে পড়াশোনা করার সময়ই তিনি কেরালা স্টুডেন্টস ফেডারেশনে (পরবর্তীতে এসএফআই) যুক্ত হন। পরে এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআই-এর সর্বভারতীয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন এবং ২০১২ সাল থেকে দলের পলিটব্যুরো সদস্য।
কেরালায় এলডিএফ সরকারের আমলে (২০০৬–২০১১) তিনি শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নেতৃত্বে রাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে নানাবিধ সংস্কার হয়। একই সঙ্গে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন—বিশেষ করে কোচি বিয়েনালে আর্ট এক্সিবিশন এবং স্বরলয়া সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর জড়িত থাকা তাঁকে দলের ‘সাংস্কৃতিক মুখ’ হিসেবে পরিচিত করেছে।
এই সময়ে সিপিএম সাংগঠনিকভাবে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। কেরালায় ক্ষমতায় থাকলেও পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় সংগঠন অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। এম এ বেবির দায়িত্ব এখন দলকে নতুনভাবে গড়ে তোলা, তরুণ নেতৃত্বের মধ্যে সংহতি আনা এবং পার্টিকে পুনরুজ্জীবিত করা। পার্টির নেতৃত্ব মনে করছে, অভিজ্ঞতা, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও সাংস্কৃতিক প্রজ্ঞা নিয়ে এম এ বেবি সেই দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করতে পারবেন।