বিজেপির জাতীয় সভাপতি শেষ কথা বলবে:আরএসএস
নিজস্ব প্রতিবেদক,মানুষের মতামত:জুনে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে তৃতীয়বার বিজেপির নেতৃত্বে এনডিএ সরকার ক্ষমতায় এসেছে। বিজেপির বর্তমান জাতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা এখন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী। জাতীয় সভাপতির সন্ধানে রয়েছেন বিজেপির সর্বস্তরের নেতারা। একটি নামে সহমত হলে তাতে সাধারণ ভাবে সবুজ সংকেত দিয়ে থাকেন বিজেপির চালিকা শক্তি আরএসএস। তারা নিজেদের থেকে কোন সভাপতির নাম প্রস্তাব দেন না বা নির্দেশও জারি করেন নি।
এই মুহুর্ত্যে সারা দেশে বিজেপি সদস্য সংগ্রহ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তারই মাঝে নাড্ডার উত্তরসুরি হিসাবে গুজরাট প্রদেশ বিজেপির সভাপতি চন্দ্রকান্ত প্যাটেল,কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের নাম নিয়ে চর্চা চলছে। এর পাশে দক্ষিণ ভারত থেকে দলের পরবর্তী সভাপতি করার আর্জিও উঠেছে। এই মুহুর্ত্যে বিজেপির জাতীয় সভাপতির দৌড়ে যে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের আস্থাভাজন চন্দ্রকান্ত প্যাটেল অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন তা বলাই বাহুল্য। একসময় নাগপুরের আরএসএস নেতাদের আস্থাভাজন ও বর্তমানে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের নামওচর্চায় এসেছিল। কিন্তু দেবেন্দ্র মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় এখন আর তাকে নিয়ে আর জল্পনা নেই।
চন্দ্রকান্ত প্যাটেল মৃদুভাষী, দক্ষ সংগঠক হলেও মোদী-অমিত শাহদের পর বিজেপির জাতীয় সভাপতি হলে দল ও প্রশাসন যে গুজরাট লবির দখলে চলে যাবে তা নিয়ে নিঃসন্দেহ রাজনৈতিক মহল। যোগী আদিত্যনাথ আগামী দিনে হিন্দি বলয় থেকে মোদীর পর প্রধানমন্ত্রীর দাবিদার হয়ে উঠতে পারেন। বিজেপির কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা অমিত শাহের চেয়ে যোগীকেই পছন্দ করছেন। আরএসএসও যোগীর কাজকর্ম, চলনে-বলনে আস্থা রাখছেন। তাই পোষ্ট মোদীর সময়ে অমিত শাহ,যোগী আদিত্যনাথ না অন্য কোন তৃতীয় ব্যক্তি যে বিজেপির মুখ হয়ে উঠবেন তা নিয়ে জোরালো চর্চা চলছে দল ও আরএসএসের অন্দরে।
বিজেপি সূত্রের খবর যে,স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী এবং অতি অবশ্যই অমিত শাহ চাইছেন চন্দ্রকান্ত প্যাটেলকে বিজেপির পরবর্তী সভাপতি করার। যাতে বিজেপির সাংগথনিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক রাশ দলের গুজরাট লবির হাতেই থাকে। কিন্তু এই চেষ্টার বিরুদ্ধে যোগী আদিত্যনাথ, নীতিন গাডকারি, শিবরাজ সিং চৌহানরা। ফলে বিজেপির পরবর্তী সভাপতি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। আর এস এস আবার যতক্ষণ না সবুজ সংকেত দিচ্ছে ততক্ষণ যে বিজেপির সভাপতি নির্দ্ধারণ যে কার্যত অসম্ভব তা মানছেন বিজেপির ইন সাইডাররা।
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে মোদীর টি আর পি কমায় ও বিজেপি দলগতভাবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোয় নতুন করে দলে আর এস এসের প্রভাব শুধু রাজনৈতিক স্তরেই নয়, সংগঠনেও পড়েছে। তাছাড়া মোদী-অমিত শাহ-চন্দ্রকান্ত প্যাটেল এই ত্রয়ীর ক্ষমতার কেন্দ্র হয়ে ওঠার নিশ্চিত সম্ভাবনাকে আর এস এস কি ভাবে নেবে তা নিয়ে নানা জল্পনা চলেছে। বিজেপির তাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক চালিকা শক্তি আর এস এস এ নিয়ে কি পরামর্শ দেয় সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। বিজেপির পরবর্তী জাতীয় সভাপতি নির্বাচন ইংরেজি নতুন বছরের শুরুতেই সম্পন্ন হতে চলেছে বলেই মনে করছেন বিজেপির ইন সাইডাররা।
মোট কথা, দেশের শাসক দল বিজেপির অন্দরে পরবর্তী জাতীয় সভাপতি নির্বাচন নিয়ে নানা টানাপোড়েন চলছে। এর ফলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ায় পরও নাড্ডাকে এখনও জাতীয় সভাপতি হিসাবে কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য হতে হচ্ছে।