ট্রাফিক জ্যামে গাড়ি দাঁড়ানোতেই স্বস্তি মুখ্যমন্ত্রীর!
স্টাফ রিপোর্টার,মানুষের মতামত:সাধারণ মানুষের মতোই ট্রাফিক জ্যামে দাঁড়িয়ে পড়া পছন্দ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক ক্ষমতা থাকার পরেও, তিনি বিশেষ প্রটোকল বা বাড়তি সুবিধার আশ্রয় নেন না। বরং তিনি চান, অন্যান্য মানুষের মতো তিনিও যানজটে আটকে থাকুন, বাস্তব পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখুন। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তিনি যখন সফরে বের হন, তখন প্রায়শই দেখা যায়, তাঁর কনভয় ট্রাফিক আইন মেনেই চলে, পুলিশের বাড়তি তৎপরতা বা রাস্তা ফাঁকা করার বাড়াবাড়ি তেমন দেখা যায় না।
সম্প্রতি শহরের এক ব্যস্ত রাস্তায় মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি যখন যানজটে আটকে যায়, তখন পাশে থাকা মানুষজন বিস্মিত হয়ে যান। অনেকেই ভেবেছিলেন, হয়তো পুলিশের উদ্যোগে রাস্তা দ্রুত পরিষ্কার হয়ে যাবে, কিন্তু তা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় সাধারণ মানুষের মতোই ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই সাধারণ জীবনযাত্রার পক্ষে এবং ট্রাফিক জ্যামের মতো ছোটখাটো বিষয়কেও গুরুত্ব দেন।
প্রশাসনিক মহলের একাংশের মতে, এই অভ্যাস কেবলমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর সাধারণ জীবনযাপনের প্রতিফলন নয়, বরং এটি রাজ্যের ট্রাফিক পরিস্থিতি বুঝতে তাঁর সচেতন প্রচেষ্টাও বটে। ট্রাফিক সমস্যার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয় বলেই হয়তো তিনি এই পথ বেছে নিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবসময়ই জনগণের নেতা হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে পছন্দ করেন। সাধারণ মানুষের জীবনের প্রতিটি দিক তিনি অনুভব করতে চান। ট্রাফিক জ্যামের মতো দৈনন্দিন সমস্যাতেও তাঁর এমন মনোভাব তাঁকে আরও কাছের করে তোলে জনগণের কাছে।
সম্প্রতি চিকিৎসকদের সঙ্গে এক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভিআইপি সংস্কৃতি সম্পর্কে তাঁর সুস্পষ্ট অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। তিনি জানান, এই ধরনের বিশেষ সুবিধা বা প্রোটোকল তিনি একেবারেই পছন্দ করেন না এবং নিজেও তা অনুসরণ করতে চান না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন,“আমি সাধারণ মানুষের মতোই চলাফেরা করতে পছন্দ করি। ভিআইপি সংস্কৃতি আমার পছন্দ নয়।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরও এই বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে কাজ করা উচিত।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মনোভাব তাঁর পূর্ববর্তী কর্মকাণ্ডেও প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি প্রায়শই বিশেষ প্রোটোকল এড়িয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যান এবং তাঁদের সমস্যার কথা সরাসরি শোনেন।এমনকি তিনি ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকতেও আপত্তি করেন না, যাতে সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা তিনি নিজে অনুভব করতে পারেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অবস্থান সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশংসিত হয়েছে। তাঁর ভিআইপি সংস্কৃতি পরিহারের মনোভাব প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাদের জন্যও উদাহরণস্বরূপ। এতে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে দূরত্ব কমবে এবং সেবার মান আরও উন্নত হবে বলে আশা করা যায়।