NewsPolitics

নবান্ন টাকা ছাড়ার প্রায় তিন মাস পরেও এক লক্ষ মানুষ বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেনি,সক্রিয় প্রশাসন

জিৎ দত্ত,মানুষের মতামত:দীর্ঘদিন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা টাকা বন্ধ থাকার পর রাজ্য সরকারের তরফ থেকে গত ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকেই প্রায় ১২ লক্ষ মানুষকে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এরপর প্রায় তিন মাসের বেশি অতিবাহিত হয়ে গেলেও বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করতে পারেননি প্রায় এক লক্ষের বেশি মানুষ। সম্প্রতি নবান্নে এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে। তাতে দুই ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ দিনাজপুর পূর্ব বর্ধমান-সহ সহ একাধিক জেলায় বাংলার বাড়ি প্রকল্পের অগ্রগতি আশানুরূপ নয়। শুধু তাই নয় রিপোর্টে এমনও জমা পড়েছে দু মাসের বেশি সময় হয়ে গেলেও এখনো একটা বড় অংশের মানুষ সেই টাকা দিয়ে সিমেন্ট বালি সহ প্রয়োজনীয় নির্মাণ সামগ্রী কিনে উঠতে পারেনি। আর টাকা দেওয়ার পরও বাড়ি তৈরিতে গড়িমোসি নিয়ে চিন্তায় পঞ্চায়েত দপ্তর।

পঞ্চায়েত দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, রাজ্য সরকার প্রথম দফায় টাকা ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি দেওয়ার পর একটা নির্দিষ্ট পর্যায়ে পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি হলেই পরবর্তী পর্যায়ে টাকা পাবেন উপভোক্তারা। ফলে যারা এখনো কাজ শুরু করেননি, তারা পরবর্তীতে টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে পারেন। এই মুহূর্তে জেলাওয়ারি বাংলার বাড়ি প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে একটা রিপোর্ট নবান্নে জমা পড়েছে। এই রিপোর্ট পর্যালোচনার কাজ চলছে।

সূত্রের খবর এই রিপোর্টে যে তথ্য রয়েছে তা যথেষ্টই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পঞ্চায়েত দপ্তরের জন্য। নবান্নে পঞ্চায়েত দপ্তরের তরফে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে তাতে বলা হয়েছে, ৪৬ হাজার উপভোক্তা টাকা পাওয়ার পরেও বাড়ি নির্মাণের জন্য ইট,বালি, সিমেন্ট সংগ্রহ করেননি। আর ৫০ হাজারের বেশি উপভোক্তা এমন রয়েছেন যারা নির্মাণ সামগ্রী সংগ্রহ করলেও কাজ শুরু করেননি।

তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই দুই তালিকা মিলিয়ে সব থেকে বেশি উপভোক্তা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ দিনাজপুর, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর এই গৃহনির্মাণের গড়িমসি সবথেকে বেশি। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, এর ফলে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২৬ হাজার, উত্তর ২৪ পরগনায় ১০ হাজারের বেশি বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরুই হয়নি। দক্ষিণ দিনাজপুরে সংখ্যাটা প্রায় ৭ হাজার।

রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই এই নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এই উপভোক্তাদের কাজ কেন থমকে রয়েছে সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। এবং যাতে এই কাজ দ্রুত শুরু করা যায় তার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে খবর। যেহেতু গরিব মানুষ নিজেদের বসবাসের জন্য সরকারি অর্থে এই বাড়ি তৈরি করছেন, তাই সরকারি আধিকারিকদের নির্মাণ কাজে উৎসাহদান, নজরদারি ও সবরকম সহযোগিতার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েত আধিকারিকদের মাসে অন্তত একবার করে নির্মীয়মাণ এই বাড়ির কাজ পরিদর্শনে যেতে বলা হয়েছে।

Share with

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *