শুভেন্দুকে কোণঠাসা করতে হলদিয়া পুনরুদ্ধারে মরিয়া তৃণমূল
প্রবীর পাঁজা,মানুষের মতামত:হলদিয়ার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ফের বদলের পথে! একসময়ের বাম দুর্গ, পরে অধিকারী-প্রভাবিত হলদিয়া এবার তৃণমূলের দিকে ঝুঁকছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আর এই সমীকরণের কেন্দ্রে রয়েছেন বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। সিপিএম থেকে বিজেপিতে যাওয়া এই নেত্রী এবার নতুন পথ ধরলেন—বদলে ফেললেন দলের পতাকা!
২০১১ সালের রাজনৈতিক পালাবদলের পরও হলদিয়া দীর্ঘদিন বামেদের ঘাঁটি ছিল। পরে শুভেন্দু অধিকারীর উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস এখানে শক্তি বাড়ায়। কিন্তু ২০২০ সালে শুভেন্দু বিজেপিতে যাওয়ার পরই ছবিটা বদলাতে শুরু করে। সেই স্রোতেই তাপসী মণ্ডলও বাম শিবির ছেড়ে যোগ দেন বিজেপিতে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে হলদিয়া আসনে জিতে বিধায়কও হন। পরে তিনি তমলুক সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভানেত্রীর দায়িত্ব পান।
কিন্তু লোকসভার ফল প্রকাশের পর থেকেই হলদিয়ার বিজেপি-রাজনীতিতে নতুন টানাপোড়েন শুরু হয়। সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে রাজনৈতিক সমীকরণ বদলাতে শুরু করে। অভিযোগ, দলের মধ্যেই কোণঠাসা হয়ে পড়েন তাপসী। সাংগঠনিক গুরুত্ব কমতে থাকে, দলে তাঁর অবস্থান দুর্বল হতে থাকে। তারই প্রতিফলন ঘটল সোমবার, ১০ মার্চ। কলকাতার তৃণমূল ভবনে গিয়ে সরাসরি শাসকদলে যোগ দিলেন তিনি।
তৃণমূলে যোগ দিয়ে তাপসী বললেন, “বিজেপির বিভাজনের রাজনীতিতে আমি ক্লান্ত। রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বকেই বেছে নিলাম।” যদিও বিজেপি নেতৃত্ব বিষয়টিকে অন্য চোখে দেখছে। শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, তাপসীর দল ছাড়ার ইঙ্গিত আগেই ছিল। আর অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কটাক্ষ করে বলেছেন, “জঞ্জাল গিয়ে জঞ্জালের ভ্যাটেই পড়ল!”
তাপসীর এই দলবদল শুধু ব্যক্তি রাজনীতি নয়, পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনৈতিক সমীকরণেরও বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। একুশের ভোটে বিজেপি এখানে ভালো ফল করেছিল, কিন্তু ছাব্বিশে সেই চিত্র পাল্টাবে কি? হলদি নদীর তীরে রাজনৈতিক হাওয়া কোন দিকে বইবে, এখন সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।