মুসলিম মুখ হিসেবে ফিরহাদের উপরেই আস্থা তৃণমূলের
পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম সমর্থন পাওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক মুসলিম নেতা সংখ্যালঘু মুখ হতে চাইছে। ফিরহাদ হাকিম ও সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর মধ্যে দলের মুসলিম মুখ হওয়ায় প্রতিযোগিতা চলছে বলে খবর। যদিও এ বিষয়ে শত যোজন এগিয়ে রয়েছেন ফিরহাদ হাকিম।
তৃণমূল কংগ্রেস দল ও তাদের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর পশ্চিমবঙ্গের উর্দুভাষী তো বটেই বাঙালি মুসলিম সমাজের অবিচল সমর্থন অব্যাহতই রয়েছে। ২০০৯ এর লোকসভা নির্বাচন ও ২০১১-এ পশ্চিমবঙ্গে সরকার পরিবর্তনের লড়াইয়ে মুসলিম সমাজ ‘দিদি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েই আস্থাশীন।
শুধু ২০১১তে পরিবর্তনের ভোটেই নয়, ২০১৬র পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে ৩১ শতাংশের মুসলিম ভোটাররা মমতাতেই আস্থা রেখেছে।
একইভাবে ২০১৪, ২০১৯ ও ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে মুসলিম জনসমর্থন পেয়ে তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির বিভাজন ও মেরুকরণের রাজনীতি রুখে দিয়েছে। বার বার পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ও উর্দুভাষী মুসলিম জনসংখ্যায় ৯০ শতাংশ বারবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন ও সেকুলারবাদের রাজনীতিতে আস্থা প্রকাশ করেছে।
২৬-এ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনেও যে মুসলিম মানসিকতার একই ধারা অব্যাহত থাকবে তা একান্তে কবুল করে চলেছেন বিজেপি ও তাদের চালিকা শক্তি আর এস এস নেতারা।
কলকাতার মেয়র ও রাজ্যের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বার বার বিতর্কিত বিবৃতি দিয়ে মুসলিম সমাজের মধ্যে প্রিয় নেতা হয়ে উঠেছেন। ফিরহাদ হাকিমের সর্বশেষ সংখ্যালঘু থেকে সংখ্যাগুরু হওয়ার বিতর্কিত বক্তব্যের নিন্দা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। নির্ভরযোগ্য সূত্রের খবর যে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো বটেই, তৃণমূলের হিন্দু নেতারা রুষ্ট হয়েছেন ফিরহাদ হাকিমের সাম্প্রদায়িক বক্তব্যে। তাই জন্য দলের এক্স হ্যান্ডেলে নাম না করে দলীয় নেতৃত্ব সতর্ক বার্তা দিয়েছেন।
সিদ্দিকুল্লা বাংলাদেশের জামাত শিবিরের সমর্থনে বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।নানা বিবৃতি দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। অন্যদিকে তৃণমূলের অভ্যন্তরে লিবারেল মুসলিম মুখ হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া ডেবরার বিধায়ক প্রাক্তন আই পি এস হুমায়ুন কবির। তাঁর কোয়ানটিটি নয় কোয়ালিটি চাই তত্ত্বকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন কংগ্রেস-বাম শিবিরের নেতারা। সিপিএম ফিরহাদ হাকিমের সাম্প্রদায়িক বক্তব্যকে প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িক রাজনীতির কৌশল বলেই মনে করছেন। তবে ফিরহাদ হাকিম মুসলিম সমাজের বড় অংশের চোখেই রাজ্যের মুসলিম মুখ হিসাবে জায়গা পেয়েছেন।