NewsPolitics

ইদের পরেই রামনবমী, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াতে পারে উত্তেজনা ,শক্ত হাতে মোকাবিলা করতে তৈরি পুলিশ-প্রশাসন 

নিজস্ব প্রতিবেদক,মানুষের মতামত:পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন ইদ ও রামনবমী উদ্‌যাপনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনিক মহল থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।

 

ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র রমজান মাসের শেষে ইদ উৎসব পালিত হয়, যা আনন্দ ও সৌহার্দ্যের প্রতীক। অপরদিকে, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নবরাত্রি ব্রতের সময় রামনবমী উদ্‌যাপিত হয়, যা ভগবান রামের জন্মতিথি হিসেবে পালন করা হয়। বাংলায় এই সময়ে বাসন্তী পুজোর সঙ্গে দেবী অন্নপূর্ণার পুজোও অনুষ্ঠিত হয়। এই দুটি ধর্মীয় উৎসবের সমাপতন রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন উসকানিমূলক পোস্ট ও ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনা বেড়েছে, যা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়াতে পারে। রাজ্যের সাইবার মনিটরিং সেলগুলোকে আরও সজাগ ও সতর্ক হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে পরিকল্পিত দাঙ্গা থেকে বাংলা ও দেশকে রক্ষা করা যায়। রাজ্য পুলিশ ও কলকাতা পুলিশ সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেছে এবং জানিয়েছে যে তারা সতর্ক রয়েছে এবং যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি কঠোর হাতে মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে রামনবমীর মিছিলের সময় অস্ত্র প্রদর্শন ও উসকানিমূলক স্লোগান থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা বলেছেন, “অতীতের অভিজ্ঞতা থেকেই এবার রামনবমীকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই পর্যাপ্ত পুলিশের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

 

সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা গেছে। মালদহের মোথাবাড়িতে একটি সাম্প্রদায়িক ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, যা প্রশাসনকে সতর্ক করে তুলেছে। রাজ্য প্রশাসন ইদ ও রামনবমী উপলক্ষে সম্ভাব্য অশান্তি এড়াতে সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি বাড়িয়েছে এবং পুলিশ বাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ ভার্মা জানিয়েছেন, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার রামনবমীকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই পর্যাপ্ত পুলিশের ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, রামনবমী মিছিল নিয়ে কেউ বাধা দিতে এলে শান্তিপূর্ণভাবে তার মোকাবিলা করা হবে এবং ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত সহ্য করা হবে না। অপরদিকে, রাজ্যের বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

 

সাধারণ মানুষকে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে আহ্বান জানানো হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো উসকানিমূলক পোস্ট বা গুজবে কান না দিয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ সন্দেহজনক কিছু লক্ষ্য করেন, তাহলে তা অবিলম্বে স্থানীয় প্রশাসন বা পুলিশের নজরে আনার অনুরোধ করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখতে ইদ ও রামনবমী উদ্‌যাপনের সময় সকলের সহযোগিতা ও সতর্কতা প্রয়োজন।প্রশাসন, রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যে কোনো অশান্তি ও বিভেদমূলক প্রচেষ্টা প্রতিহত করা সম্ভব হবে।

Share with

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *