NewsPolitics

মুখ্যমন্ত্রীর কূটনৈতিক চালে সাফল্যের উড়ান! ফের চালু হতে পারে কলকাতা-লন্ডন সরাসরি বিমান

জিৎ দত্ত,মানুষের মতামত: মুখ্যমন্ত্রীর লন্ডন সফর ঘিরে রাজনৈতিক মহলে বিস্তর জলঘোলা হলেও,সফরের সমাপ্তির আগেই ভেসে এল এক অভাবনীয় সুখবর।বাম আমলে বন্ধ হয়ে যাওয়া কলকাতা ও লন্ডনের মধ্যেকার সরাসরি বিমান পরিষেবাপুনরায় চালুর সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টাতেই এই দিগন্ত উন্মোচিত হতে চলেছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।

লন্ডন সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায় কেবল হাইকমিশনের অনুষ্ঠানেই নন, বরং শিল্প সম্মেলনেও এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। তিনি ব্রিটিশ এয়ারওয়েজকে সরাসরি বিমান পরিষেবা চালুর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানান। শুধু তাই নয়, যাত্রী পরিবহনের শুরুতে প্রয়োজনে জ্বালানি শুল্কে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাবও রেখেছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর এই আন্তরিক আহ্বানে সাড়া দিয়ে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ কলকাতা থেকে লন্ডনগামী সরাসরি বিমান চালুর বিষয়ে প্রাথমিক স্তরের আলোচনা শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।

সূত্রের খবর, বিমান কর্তৃপক্ষ এই রুটে যাত্রী সংখ্যার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবে। বিশেষত বিজনেস ও ফার্স্ট ক্লাসের আসন পূরণের সম্ভাবনা কতটা, তা নিয়েও বিস্তারিত সমীক্ষা চালাবে তারা। কারণ, এই দুটি শ্রেণির যাত্রী সংখ্যা পর্যাপ্ত হলেই বিমান সংস্থা আর্থিকভাবে লাভবান হবে।

লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের জেরে সূচিতে অপ্রত্যাশিত বদল ঘটলেও, মুখ্যমন্ত্রী সুযোগ পেলেই এই বিষয়টি তুলে ধরেছেন। হাইকমিশনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি সরাসরি লন্ডন থেকে কলকাতার বিমান পরিষেবার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “বাংলা খুব একটা দূরে নয়। কিন্তু লন্ডন থেকে সরাসরি একটি বিমান থাকলে সকলের খুব সুবিধা হবে। আমি ইউকের অ্যাম্বাসেডরকেও বিষয়টি দেখার অনুরোধ করব। আগে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের বিমান ছিল। এখন এই পরিষেবা পুনরায় চালু হলে অনেক সুবিধা হবে।”

এরপর মঙ্গলবার বণিকসভাতেও মুখ্যমন্ত্রী একই আর্জি জানান। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজকে বিনীত অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, “কলকাতা-লন্ডন সরাসরি বিমান চালু করুন। যাঁরা প্রথম আসবেন, তাঁদের জ্বালানিতে ছাড় দেব। অন্ডালে আমাদের গ্রিন এয়ারপোর্ট তৈরি হয়েছে। একটিও আসন খালি থাকবে না।” তিনি আরও বলেন, “আগে এই বিমান পরিষেবা চালু ছিল, কিন্তু আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার আগে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কেন, তা আমার জানা নেই। তবে এখন বিমানে সবসময় যাত্রী পূর্ণ থাকে। এই পরিষেবা চালু করলে আপনাদের ব্যবসাও বাড়বে। আমরা প্রথম দিকে জ্বালানিতে বিশেষ ছাড় দেব।”

মুখ্যমন্ত্রীর এই জোরালো আবেদনের পরেই ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ নড়েচড়ে বসেছে এবং কলকাতা-লন্ডন সরাসরি বিমান চালুর পরিকল্পনা শুরু করেছে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে খুব শীঘ্রই এই বহু প্রতীক্ষিত পরিষেবা শুরু হতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। যদি এই উদ্যোগ সফল হয়, তবে তা নিঃসন্দেহে মুখ্যমন্ত্রীর লন্ডন সফরের একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হবে এবং বাংলার মানুষের জন্য এক বড় পাওনা হতে চলেছে। দীর্ঘদিন পর লন্ডনগামী যাত্রীদের আর কানেক্টিং ফ্লাইটের ঝক্কি পোহাতে হবে না,যা ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ব্যক্তিগত যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

Share with

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *