দোল উৎসবে ভেজাল রঙের আতঙ্ক! সাবধানতার বার্তা প্রশাসনের
নিজস্ব প্রতিবেদক,মানুষের মতামত:আগামী শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গে দোল উৎসব। রং, আবীর আর আনন্দের এই উৎসবকে ঘিরে এখন সাজো সাজো রব।লাল, নীল,সবুজ, হলুদ, গেরুয়া— নানা রঙের আবীরে রাঙিয়ে দেওয়ার জন্য সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। কিন্তু এই আনন্দ যেন বিপদ না ডেকে আনে, তাই এ বার বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে রাজ্য থেকে জেলার প্রশাসন।
ভেজাল রঙের বিপদ
দোল উপলক্ষে বিভিন্ন বাজারে রং এবং আবীর বিক্রি শুরু হয়ে গিয়েছে।তবে পরিবেশবিদরা ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, ভেজাল রং এবং রাসায়নিকযুক্ত আবীর শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
ভেজাল রঙের সমস্যা মূলত দুই ধরনের—
1.কেমিক্যালযুক্ত রং: অনেক সময় রঙের উজ্জ্বলতা বাড়াতে লেড অক্সাইড,কপার সালফেট,মার্কারি সালফাইডের মতো বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। এগুলো ত্বকে অ্যালার্জি, চোখে জ্বালা,এমনকি ক্যানসারের আশঙ্কা পর্যন্ত বাড়াতে পারে।
2.সিন্থেটিক আবীর: অনেক সস্তার আবীরে তেল রং, কাপড়ের রং বা কৃত্রিম রঞ্জক ব্যবহার করা হয়, যা শরীরে ত্বকের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
পরিবেশবান্ধব রং ব্যবহারের পরামর্শ
রাজ্যের পরিবেশ দফতর ইতিমধ্যেই পরিবেশবান্ধব রং ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। গাছগাছালি,ফুল,শাকসবজি থেকে প্রাকৃতিক রং তৈরি করা যায়,যা শরীরের জন্য নিরাপদ।
প্রাকৃতিক রঙের কিছু সহজ উৎস—
• হলুদ: হলুদ গুঁড়ো বা চন্দন
• লাল: পালংশাক, চুকন্দর বা লাল গাঁদা ফুল
• সবুজ: নিমপাতা বা ধনে পাতা
• নীল: অপরাজিতা ফুল
• কমলা: গাঁদা ফুল
জনসচেতনতার প্রয়োজন
কলকাতা এবং তার আশপাশের এলাকায় ইতিমধ্যেই রাস্তার ধারে বিভিন্ন জায়গায় রং ও আবীর বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে ক্রেতাদের অবশ্যই দেখে শুনে কেনার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
কেনার সময় কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি—
1. খুব উজ্জ্বল বা ঝলমলে রং এড়িয়ে চলুন-অধিকাংশ কৃত্রিম রঙেই ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকে।
2. গন্ধ পরীক্ষা করুন- যদি রঙে তীব্র রাসায়নিক বা তেলের গন্ধ থাকে, তবে সেটি ব্যবহার করবেন না।
3.বিশ্বস্ত দোকান থেকে কিনুন- রাস্তার ধারের দোকান বা অতি কম দামে বিক্রি হওয়া রং থেকে সাবধান থাকুন।
4. প্রাকৃতিক বিকল্প বেছে নিন – বাজারে এখন অনেক সংস্থা অর্গানিক আবীর বিক্রি করছে, সেগুলো কেনাই ভালো।
দোল উৎসবের আনন্দ যেন কোনওভাবে ক্ষতির কারণ না হয়, সেজন্য সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে। শুধুমাত্র কম দামের লোভে রাসায়নিকযুক্ত রং কিনলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে, এমনকি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই এবারের দোল হোক নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব রঙের উৎসব!