বিদ্রোহী হুমায়ূন ছাড়ছেন তৃণমূল?
তাপস চক্রবর্তী,মানুষের মতামত:পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক স্পর্শকাতর জেলা মুর্শিদাবাদ। এই মুহুর্ত্যে সাম্প্রদায়িক হিংসা,নাশকতায় মুর্শিদাবাদে সামাজিক-ধর্মীয়-রাজনৈতিক বিভাজনের রাজনীতিও তুঙ্গে। মুসলিম সংখ্যাধিক্য এই সীমান্ত জেলাতেও বিজেপি হিন্দুত্বের ঘুঁটি সাজাতে চলেছে। বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি মুর্শিদাবাদে এবার তৃণমূলের বড় রকমের বিপর্যয় ও ভাঙ্গন ঘটতে চলেছে। হিন্দুরা বিজেপির দিকে। মুসলিমদের বড় অংশ কংগ্রেসমুখি। ফলে মুর্শিদাবাদ জেলার ২২টি বিধানসভার আমলে তৃণমূল বিপর্য্যস্ত হবে এমন ধারনা শুধু বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীরই নয়,কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীও কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবনের স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন। হুমায়ুন কাঁটায় বিদ্ধ তৃণমূল। তিনি যে দল ছাড়ছেন তা নিশ্চিত।
এরই মধ্যে তৃণমূল কংগ্রসের অস্বস্তি বাড়িয়ে চলেছেন ভরতপুরের দলের বিদ্রোহী বিধায়ক,প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ূন কবিরও। তার নানা বিতর্কিত বক্তব্যে সীমাহীন অস্বস্তিতে পড়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল নেতা জনপ্রতিনিধিরা গোপনে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে যোগ রাখছেন বলেই হুমায়ূন কবিরার বিস্ফোরক দাবি। এদিকে তৃণমূলের অন্দরের খবর যে গোপনে কংগ্রেসের ফেরার প্ল্যান মত হুমায়ূন কবির দলের মধ্যে নাশকতা চালাচ্ছেন। তৃণমূল কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছেন যে ২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে ভরতপুর বা জেলার কোন কেন্দ্রেই হুমায়ূন কবিরকে দলের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। হুমায়ুন নিজেই দল গড়ার হুমকি দিয়েছেন। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুর্শিদাবাদে তৃণমূলে ভাঙ্গন ঘটাতে অতি সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন। অধীরবাবুর দাবি মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের সঙ্গে মূল লড়াই হবে কংগ্রেসের। তবে হিন্দু ভোটের মেরুকরণের যে চেষ্টা আরএসএস-বিজেপি করে চলেছে তার প্রভাব কংগ্রেসের হিন্দু নেতা,কর্মীদের মধ্যে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে অধীর চৌধুরীর। তবে জেলায় ২২ আসনের মধ্যে মুসলিম জনসংখ্যা বহুল ১৬টি আসনে যে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের মূল লড়াই হবে তা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে অধীর চৌধুরী। তার ভাব শিষ্য হুমায়ূন কবির কংগ্রেসে ফিরছেন কিনা তা নিয়ে অবশ্য তিনি নীরবেই থাকতে চান।
পাশ্চমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের মুসলিম ভোট ব্যাংকে ফাটল ধরাতে আগ্রহী একাদকে বিজেপি,অন্যদিকে সিপিএম-কংগ্রেস।পশ্চিমবঙ্গে এই মুহুর্ত্যে নড়বড়ে থাকা সিপিএমের পক্ষে যে মুসলিম ভোটে ফাটল ধরানো সম্ভবপর নয়,তা মানেন রাজনৈতিক মহল। কিন্তু কংগ্রেস বা নওশাদ সিদ্দিকির আইএসএফ মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় তৃণমূলের গলার কাঁটা হয়ে উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে বহু দলে যাওয়া বিতর্কিত হুমায়ুন কবির তৃণমূল কংগ্রেসকে ব্ল্যাকমেইল করতে পৃথক মুসলিম দল গঠনের আওয়াজ দিয়ে চলেছেন। হুমায়ুন একদিকে কংগ্রেস,বাম শিবির,অন্যদিকে আসাদ উদ্দিন ওয়েইসির মিমের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। মুর্শিদাবাদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুসলিম ভোটে একাধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতেই বিদ্রোহী হয়েছেন হুমায়ুন। তৃণমূলের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছেন ফুরুফুর শরিফের পীরজাদা তোহা সিদ্দিকিও। তাকে এড়িয়ে যে ভাবে তৃণমূল কাসেম সিদ্দিকিকে গুরুত্ব দিয়েছেন তা মানতে পারছেন না তোহা সিদ্দিকি। এই পরিস্থিতি বিতর্কিত বিদ্রোহী হুমায়ুন কবিরের দল ছাড়া সময়ের অপেক্ষা মাত্র বলেই মনে করছেন রাজনৈতিল মহল।