বঞ্চিত শিক্ষকদের পাশে থাকার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর,৭ এপ্রিল সভায় থাকবেন নেতাজি ইনডোরে
জিৎ দত্ত,মানুষের মতামত:এসএসসি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাতিল হয়েছে রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষকের চাকরি। রায় প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের জানালেন, বঞ্চিত, অথচ যোগ্য প্রার্থীদের পাশে আছেন তিনি এবং তাঁর সরকার। শুধু তা-ই নয়, আগামী ৭ এপ্রিল নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে বঞ্চিত শিক্ষকদের ডাকা সভায় তিনি উপস্থিত থাকবেন বলেও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বলেন, “যখন কেউ পাশে থাকে না, তখন কেউ না কেউ আসে। ওরা হয় ঈশ্বর, আল্লাহ, মা—কারও না কারও রূপে। বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধতেই হবে। এটাই সময় সতর্ক হওয়ার। বিজেপি আর সিপিএম-এর মুখোশ খুলে গেছে। যারা চাকরি দিতে পারে না, তারা কেড়ে নেবেন কীভাবে?”
তিনি বলেন, “এই রায় যেমন আমাদের বিরুদ্ধে এসেছে, ঠিক তেমনই এই রায় থেকেই একটা রাস্তা খুলেছে। আমরা নিয়োগ করবই। তবে সেই সঙ্গে এটাও বলব, আমরা রেকর্ড খুঁজে বের করব—২০১৬ সালে কারা মন্ত্রী ছিলেন, কাদের হাত ধরে চাকরি হয়েছে। কেউ যদি আমাদের তথ্য দেন, কাজে লাগবে।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন, কেউ কেউ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। মমতার আশঙ্কা, “কোনও অঘটন ঘটে গেলে দায় কার?” তাই তিনি সকলকে ধৈর্য রাখার আবেদন করেছেন এবং আশ্বস্ত করেছেন, সরকার তাঁদের পাশে আছে।
“আমরা চাই না একটা ঘটনাও ঘটুক,” বলেন মমতা। “কেউ হয়তো মায়ের চিকিৎসার খরচ চালাচ্ছেন, কেউ লোন নিয়েছেন, কেউ সন্তানের পড়াশোনার খরচ দিচ্ছেন। চাকরি না থাকলে তাঁদের জীবন ভেঙে পড়বে। সেই বোঝা কি সিপিএম-বিজেপি বহন করবে?”
সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁরা একটা সংগঠন করুন—‘বঞ্চিত টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’। আমি শিক্ষা মন্ত্রীকে বলেছি, এঁরা সবাই মিলে একসঙ্গে একটা মিটিং করতে চান। আমি নিজেও যাব। মুখ্যসচিব, আইনজীবী, শিক্ষামন্ত্রী, সমাজের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত থাকবেন। ৭ তারিখ দুপুর ১২.১৫টা নাগাদ ইনডোর স্টেডিয়ামে যাব, তাঁদের কথা শুনব। বলব, ধৈর্য হারাবেন না। আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হবে—এটাই রায়ে বলা হয়েছে।”
বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের মানবিকতার ওপর যদি কেউ মামলা করে, জেলে পাঠায়—তাহলে আমি বলব, ক্যাচ মি ইফ ইউ ক্যান! আমি ভয় পাই না।”
সংবাদ সম্মেলনের শেষে মমতা ফের জোর দিয়ে বলেন, “যোগ্যদের পাশে আমরা ছিলাম, আছি এবং থাকব। বাংলা ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনও রাজনৈতিক দল খেলবে, সেটা হতে দেব না।”