যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে স্কলারশিপ দুর্নীতি
নিজস্ব প্রতিবেদক,মানুষের মতামত:যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একাংশের ছাত্রছাত্রীরা সরকারি স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য গ্রেড কার্ড টেম্পারিং করে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মতে, প্রায় ৪০ জনেরও বেশি পড়ুয়া এই অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত।
দুর্নীতির উন্মোচন:
বিকাশ ভবনের কর্মকর্তাদের সন্দেহ হওয়ায় দুই ছাত্রের নথি যাচাইয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পাঠানো হয়। পরীক্ষার পর দেখা যায়, ওই দুই ছাত্র সেমিস্টার পদ্ধতির সমস্ত পরীক্ষায় পাশ না করেও গ্রেড কার্ড টেম্পারিং করে নিজেদের পাশ দেখিয়েছেন। এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও তদন্ত শুরু করে এবং প্রায় ৪০ জনেরও বেশি পড়ুয়ার বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগের সত্যতা পায়।
ছাত্রদের প্রতিক্রিয়া:
স্কলারশিপ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা অস্থায়ী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তাদের দাবি,অবিলম্বে তাদের স্কলারশিপ পুনর্বহাল করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবস্থান:
অস্থায়ী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত বলেন, “ছাত্রছাত্রীরা এই ধরনের কাজ করতে পারে তা আমরা কল্পনাই করতে পারি না। বিকাশ ভবন থেকে বিষয়টি সামনে না এলে আমরা জানতেই পারতাম না। ওদের অনৈতিক দাবি কোনোভাবেই মানা হবে না, যতই আমাকে ঘেরাও করা হোক।”
প্রশাসনিক পদক্ষেপ:
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের তদন্ত শুরু করেছে।তাদের গ্রেড কার্ড টেম্পারিং এবং স্কলারশিপের জন্য মিথ্যা তথ্য প্রদানের অভিযোগে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। এছাড়া, ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা রোধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরও কঠোর নজরদারি এবং যাচাই প্রক্রিয়া চালু করার পরিকল্পনা করছে।
সমাজের প্রতিক্রিয়া:
এই ঘটনা শিক্ষাজগতে এবং সমাজে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। ছাত্রছাত্রীদের এই ধরনের অনৈতিক কার্যকলাপ শিক্ষার মান এবং নৈতিকতার ওপর প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনা রোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে আরও সতর্ক এবং কঠোর হতে হবে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনা শিক্ষাক্ষেত্রে নৈতিকতার অবক্ষয়ের একটি উদাহরণ। ছাত্রছাত্রীদের উচিত সৎ পথে থেকে নিজেদের মেধা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষেরও উচিত কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা রোধ করা এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা।