সিপিএমের ভরসা সেলিমেই, নতুন রাজ্য কমিটিতে নেই সুশান্ত ঘোষ,নতুন প্রজন্মের নেতাদের প্রাধান্য
স্টাফ রিপোর্টার,মানুষের মতামত: আরও একবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক হলেন মহম্মদ সেলিম। একই সঙ্গে সিপিএমের রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়লেন প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ। দলের ২৭তম রাজ্য সম্মেলনের পর নতুন ৮০ সদস্যের রাজ্য কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে জায়গা পাননি বহু পরিচিত নেতা। নতুন রাজ্য সম্পাদক হয়েছেন মহম্মদ সেলিম। সিপিএমের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে চর্চা।
সুশান্ত ঘোষের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের দুই প্রাক্তন নেতা অশোক ভট্টাচার্য ও জীবেশ সরকারকেও নতুন কমিটিতে রাখা হয়নি।বিশেষজ্ঞদের মতে,এই সিদ্ধান্ত উত্তরবঙ্গে দলের নেতৃত্ব সংকটকে আরও গভীর করে তুলবে।
সিপিএম এই বিষয়ে সরাসরি কিছু না বললেও, মনে করা হচ্ছে কিছু মাস আগের এক বিতর্কিত অভিযোগের জেরেই সুশান্ত ঘোষকে সরানো হয়েছে। একজন মহিলা সিপিএম নেত্রীর অভিযোগের পর তাঁকে জেলা সম্পাদকের পদ থেকে সরানো হয়েছিল, তবে তখনও রাজ্য কমিটিতে রাখা হয়েছিল। রাজ্য সম্মেলনের পর এবার তাঁকে পুরোপুরি তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হল। এমনকি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটিতেও জায়গা পাননি তিনি।
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে এবার বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে।প্রবীণ নেতা বাঁকুড়ার অমিয় পাত্রকেও বয়সজনিত কারণে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য করা হয়েছে। একইসঙ্গে, দলের একমাত্র রাজ্যসভা সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্যকে রাজ্য কমিটি বা আমন্ত্রিত সদস্যদের তালিকায় রাখা হয়নি।
এছাড়া যুবনেতা কলতান দাশগুপ্তকেও নতুন কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে,এর পিছনে তাঁর আগের গ্রেফতারির বিষয়টিই প্রধান কারণ হতে পারে।
নতুন ৮০ সদস্যের রাজ্য কমিটিতে ১৪ জন মহিলা জায়গা পেয়েছেন। নতুন মুখ হিসেবে ১১ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন হুগলির তরুণ ট্রেড ইউনিয়ন নেতা তীর্থঙ্কর রায়।দলের ডিজিটাল প্রচার এবং তাত্ত্বিক কাজের দায়িত্বে থাকবেন শান্তনু দে।
কমিটির কন্ট্রোল কমিশনের চেয়ারপার্সন করা হয়েছে অঞ্জু করকে। তবে নতুন কমিটিতে তেমন কোনও বড় চমক নেই। ছাত্র-যুব ফ্রন্ট থেকেও নতুন কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, যদিও ভবিষ্যতে কয়েকজনকে আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে যুক্ত করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
সিপিএমের এই রদবদল ঘিরে রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, উত্তরবঙ্গে পরিচিত নেতাদের বাদ দেওয়ায় সেই অঞ্চলে সংগঠনের নেতৃত্ব সংকট আরও বাড়তে পারে। সুশান্ত ঘোষের মতো প্রবীণ নেতার বিদায় দলের গঠনতন্ত্রে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ছাত্র-যুব সংগঠনের নতুন কোনও প্রতিনিধি না থাকায় দলের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়েও সংশয় তৈরি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সিপিএম এখন নতুন প্রজন্মের নেতাদের দায়িত্ব দিতে চাইছে, তবে একাধিক পুরনো মুখ বাদ যাওয়ায় দলের ভিতরে ক্ষোভও বাড়তে পারে। এখন দেখার,এই নতুন কমিটি আগামী দিনে সিপিএমের ভবিষ্যৎ কোন পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।