NewsRecent News

ভাঙড়ে ব্রিজ গার্ডরেল ভেঙে চুরির অভিযোগ,প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

ইয়ামুদ্দিন সাহাজী,মানুষের মতামত:ভাঙড়ের শোনপুরে এক চাঞ্চল্যকর ও দুঃসাহসিক ঘটনা সামনে এসেছে। বাগজোলা খালের ওপর অবস্থিত সোনপুর ব্রিজের গার্ডরেল ভেঙে ফেলার পাশাপাশি পিলারে ড্রিল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।অভিযোগ,রাতের অন্ধকারে এই বেআইনি কাজ চালানো হচ্ছিল,যা ব্রিজের স্থায়িত্ব এবং জননিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রশাসনের নাকের ডগায় কীভাবে এই ধরনের বেআইনি কার্যকলাপ চলল,তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।তাদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন অবৈধ নির্মাণ চলছে,কিন্তু প্রশাসন বা পুলিশ তেমন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এবার তো সরকারি ব্রিজেরই অংশ ধ্বংস করে দোকান তৈরির কাজ শুরু হয়েছে!এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।

এই ব্রিজটি তৈরি হয়েছিল ২০১০ সালে, তৎকালীন ভূমি রাজস্ব দপ্তরের মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা ও আরাবুল ইসলামের উদ্যোগে।স্থানীয়দের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যম। কিন্তু সম্প্রতি,এক ব্যবসায়ী তার নতুন দোকান তৈরির জন্য ব্রিজের গার্ডরেল খুলে ফেলে এবং লোহার শাটার বসানোর জন্য ব্রিজের পিলারে একাধিক ড্রিল করে। এমন ঘটনা নজরে আসতেই স্থানীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং পুলিশে অভিযোগ জানান।

স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে উত্তর কাশিপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। তবে প্রশ্ন উঠছে, এতদিন ধরে প্রশাসন কী করছিল? শাসক দলের অজ্ঞাতসারে কীভাবে এমন একটি বেআইনি নির্মাণের কাজ চলল? এসব প্রশ্নের উত্তর এখনো অধরা।

স্থানীয়দের একাংশের মতে, প্রশাসনের নীরবতা কিংবা শাসকদলের নেতাদের মদত ছাড়া এমন কাজ সম্ভব নয়। তাদের অভিযোগ, শুধু ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করা হচ্ছে, আর প্রশাসন সব জেনেও চুপ করে আছে।

এভাবে ব্রিজের গঠন নষ্ট করা শুধুমাত্র বেআইনি নয়, এটি অত্যন্ত বিপজ্জনকও। পূর্ত দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা ঘটনাস্থলে গিয়ে পুরো বিষয়টি দেখে অবাক হয়েছেন। তারা স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই ধরনের নির্মাণ ব্রিজের ধারণ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেবে এবং যে কোনো সময় বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে স্থানীয়দের দাবি, শুধু তদন্তের আশ্বাস নয়, অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। সেইসঙ্গে ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের বেআইনি নির্মাণ আর না হয়, তার জন্য কঠোর নজরদারি চালাতে হবে।

বর্তমানে ব্রিজের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তারা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি করেছেন। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন সত্যিই যথাযথ ব্যবস্থা নেয় নাকি ঘটনাটি ধামাচাপা পড়ে যায়!

Share with

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *