চুরির হাত থেকে রক্ষা পেতে ক্যাশ বাক্সে বিদ্যুৎ সংযোগ, মৃত্যু হল তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রের
ইয়ামুদ্দিন সাহাজী,মানুষের মতামত:দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা থানার দূর্বা চটি এলাকায় চুরির হাত থেকে দোকান রক্ষা করতে বর্বর পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন এক দোকান মালিক। তার ব্যবহৃত পদ্ধতিতে প্রাণ হারালো মাত্র আট বছরের শিশু। তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র শুকদেব মান্না দাস দোকানের ভেতর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মর্মান্তিকভাবে মারা যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই দোকানে বারবার চুরির ঘটনা ঘটছিল। চুরির হাত থেকে রক্ষা পেতে দোকান মালিক ক্যাশ বাক্সের সঙ্গে জিআই তার দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করেন। কিন্তু তার এই পদক্ষেপ কাল হয়ে দাঁড়ায়।
ঘটনার দিন, শিশু শুকদেব তার দিদির সঙ্গে দোকানে প্রবেশের চেষ্টা করে। টালি খুলে দোকানে ঢোকার পর সে ক্যাশ বাক্স স্পর্শ করে, তখনই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। দোকানের ভেতরে শিশুটির চিৎকার শুনে বাইরে দাঁড়ানো দিদি চেঁচামেচি শুরু করে। তার ডাক শুনে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে দোকানের ভেতরে শিশুটিকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে।
খবর পেয়ে পাথরপ্রতিমা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পাশাপাশি অভিযুক্ত দোকান মালিককে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া দোকান মালিক জানান, “ইলেকট্রনিক্সের দোকানে বিভিন্ন তারের সংযোগ ছিল। ঘটনাটি সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত। আমি কেবল দোকান রক্ষার চেষ্টা করছিলাম।” তবে তার এই দাবি সত্ত্বেও এলাকাবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। তারা এই বর্বর পদক্ষেপকে মানবিকতার চরম লঙ্ঘন বলে দাবি করেছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, “চুরি প্রতিরোধ করতে এমন অমানবিক পদ্ধতি গ্রহণ করার অধিকার কারও নেই। এটি একটি শিশুর প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। আমরা এর উপযুক্ত শাস্তি চাই।”
চুরি ঠেকাতে এ ধরনের প্রাণঘাতী পদ্ধতি গ্রহণ অত্যন্ত নিন্দনীয়। এটি কেবল আইনের লঙ্ঘন নয়, মানবিকতাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে এমন মর্মান্তিক ঘটনা আর না ঘটে।
“চুরির প্রতিরোধ মানবিকতার সীমা লঙ্ঘন করে হতে পারে না। সমস্যা সমাধানের জন্য আইন এবং মানবিক পদ্ধতির উপর নির্ভর করাই সর্বোত্তম পথ।”