জেলায় জেলায় বন্যার ভ্রুকুটি,ঘরছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় লক্ষ লক্ষ মানুষ
নিবারণ চক্রবর্তী,মানুষের মতামত:পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় লাগাতার বৃষ্টিপাত ও প্রতিবেশী রাজ্যগুলির জলাধার থেকে ছাড়া জলের ফলে বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল আকার নিচ্ছে। নদী উপচে জল ঢুকছে গ্রামের পর গ্রামে। চাষের জমি, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি—সব কিছু জলের তলায়। পরিস্থিতির জেরে ঘরছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন কয়েক লক্ষ মানুষ।
উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের অন্তত দশটি জেলায় বন্যার সতর্কতা জারি করেছে রাজ্য সরকার। মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক ব্লকে জলবন্দি হয়ে পড়েছে বহু পরিবার। ছোট ছোট গ্রাম, গ্রামীণ রাস্তাঘাট এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি জলমগ্ন হয়ে পড়ায় খাদ্য ও পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইতিমধ্যেই একাধিক শীর্ষ প্রশাসনিক আধিকারিককে বিপর্যস্ত জেলাগুলিতে পাঠিয়েছেন। জরুরি ত্রাণ পৌঁছে দিতে শুরু হয়েছে এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ-এর যৌথ অভিযান। চাল, ডাল, জলের পাউচ এবং ওষুধ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে দুর্গম এলাকায়।
তবে সত্ত্বেও, স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন যে বহু জায়গায় এখনও পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছয়নি। নদী বাঁধ ভেঙে পড়ার আতঙ্কে ইতিমধ্যেই অনেক পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। চাষাবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কৃষিজীবী পরিবারগুলির মধ্যে ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রবল অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, তা এখনই বলা কঠিন। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আরও দু-একদিন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে সেনা নামানোর বিষয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে।