“এবিসিডি যেই হোন, অনুমতি নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার সকলের আছে”: মমতা
জিৎ দত্ত,মানুষের মতামত:পহেলা বৈশাখের প্রাকমুহূর্তে রাজ্যের বহু প্রতীক্ষিত কালীঘাট স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুনভাবে সেজে ওঠা এই স্কাইওয়াক উদ্বোধনের দিন রাজ্যের সাম্প্রতিক উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিকে ঘিরে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে উঠে এল শান্তির বার্তা। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, মেয়র ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, স্নেহাশীষ চক্রবর্তী, সাংসদ মালা রায়, সৌগত রায়, অভিনেতা দেব, জুন মালিয়া, শিল্পপতি হর্ষবর্ধন নেওটিয়া সহ একাধিক বিশিষ্টজন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমি অন্য কোনো অনুষ্ঠানে গেলে অনেকে আমার টাইটেলটাই পাল্টে দেন। ধর্ম নিয়ে অধার্মিক খেলা খেলতে নেই। ধর্ম মানে সম্প্রীতি, একতা। তাই কিসের লড়াই, কিসের দাঙ্গা? বাংলার মাটি শান্তির মাটি। এই মাটিকে ভালোবাসুন। শান্তি বজায় রাখুন। কেউ কারো প্ররোচনায় পা দেবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। গণতান্ত্রিক দেশে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনের অধিকার সকলের আছে। তবে তা করতে হবে অনুমতি নিয়ে। এবিসিডি যেই হোন, আইন মেনে চলা সকলেরই দায়িত্ব।”
স্কাইওয়াক প্রকল্প নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, দক্ষিণেশ্বরের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে কালীঘাটেও হকারদের সম্মান অটুট রেখেই কাজ করা হয়েছে। সরকার নিজে এই প্রকল্পে ৯৯.৯৯ শতাংশ অর্থ খরচ করেছে। রিলায়েন্স একটি ছোট কাজ করতে চেয়েছিল, সেটাই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
৪৫০ মিটার দীর্ঘ এবং ১০.৪ মিটার প্রস্থের এই আধুনিক স্কাইওয়াকে রয়েছে চলমান সিঁড়ি, লিফট, আধা-গোলাকার পলিকার্বনেট ছাউনি, এবং মন্দিরমুখী পথ। এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭ মিটার উঁচুতে এবং সর্বোচ্চ উচ্চতা ১৬.৫ মিটার। স্কাইওয়াক থেকে হকারদের জন্য তৈরি করা চারতলা শীততাপ নিয়ন্ত্রিত মলে সরাসরি প্রবেশপথ রাখা হয়েছে। নিচের পথ গাড়ি চলাচলের উপযোগী করে হকার মুক্ত রাখা হয়েছে।
২০২১ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের কাজ শেষ হল ২০২৫-এর এপ্রিল মাসে। প্রাথমিক বাজেট ছিল ৭০ কোটি, যা বাড়িয়ে ৮২ কোটিতে পৌঁছেছে অতিরিক্ত কাজ এবং জিএসটির কারণে।
রাজ্যে যখন মুর্শিদাবাদ, ভাঙড় সহ বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তখন কালীঘাটের মতো ধর্মতীর্থ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা রাজনৈতিক এবং সামাজিক দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।