NewsPolitics

ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখতে বছরভর সমীক্ষা, নববর্ষের পরই মাঠে নামছে তৃণমূল

জিৎ দত্ত,মানুষের মতামত:রাজ্যে ভোটার তালিকায় বহিরাগতদের নাম ঢুকে পড়ার আশঙ্কা আগেই প্রকাশ্যে এনেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই আশঙ্কার জায়গা থেকেই ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখতে রাজ্যজুড়ে বছরব্যাপী সমীক্ষায় নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। নববর্ষের ঠিক পরেই, ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হবে এই বিশেষ সমীক্ষা। চলবে আগামী বছরের এপ্রিল পর্যন্ত। দলীয় সূত্রে খবর, এই সমীক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকছে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আই-প্যাকও।

তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ২০২৬-এ নির্ধারিত বিধানসভা ভোটের আগে ভোটার তালিকা যেন সঠিক থাকে, তা নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ। দলের এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, “যাঁরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে এই যাচাই করবেন, তাঁদের প্রশিক্ষণের কাজ প্রায় শেষের দিকে। ভবিষ্যতে আরও কর্মী লাগলে, তাঁদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।”

দলীয় সূত্রে আরও খবর, সমীক্ষার জন্য চার স্তরের পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে পঞ্চায়েত ও ব্লক স্তরের ‘ইলেক্টোরাল সুপারভাইজার’, আর শহরে ওয়ার্ড ও টাউন স্তরের সমন্বয়কারী থাকবেন। তাঁদের কাজ, প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে ভোটার তালিকার সঙ্গে বাস্তব তথ্য মিলিয়ে দেখা।

আই-প্যাকের তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তায় একটি কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার তৈরি হয়েছে। সমীক্ষার মাধ্যমে সংগৃহীত যাবতীয় তথ্য সেখানে আপলোড করা হবে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সেই তথ্য যে কোনও সময়ে দেখতে পারবেন।

ফেব্রুয়ারিতে কলকাতায় এক সাংগঠনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন, ভোটার তালিকা নিয়ে বিস্তারিত খতিয়ে দেখতে হবে। তাঁর অভিযোগ ছিল, বাইরের রাজ্য থেকে অনেকের নাম বেআইনি ভাবে রাজ্যের ভোটার তালিকায় ঢুকছে। সেই নির্দেশ মেনেই দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে বিশেষ পর্যবেক্ষক কমিটি।

তৃণমূলের অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, অন্য রাজ্যের ভোটারের ও রাজ্যের ভোটারের EPIC নম্বর এক। গত মাসে এই নিয়ে তৃণমূল সাংসদদের এক প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানায়, যেন আধার ও পাসপোর্টের মতো ভোটার কার্ডেও একটি ‘একক পরিচিতি নম্বর’ বাধ্যতামূলক করা হয়।

সব মিলিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজের ‘ভোটভিত্তি’ আরও পোক্ত করতে সংগঠন ও প্রশাসনের হাত ধরেই মাঠে নামছে তৃণমূল। এবং এবার লক্ষ্য শুধুই প্রচার নয়—ঘরে ঘরে তালিকা যাচাই।

Share with

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *