‘বিচারকে সম্মান করি, কিন্তু এই রায় মানা যায় না’, প্যানেল বাতিলের রায়ে সরব মুখ্যমন্ত্রী
জিৎ দত্ত,মানুষের মতামত:২৬ হাজার চাকরিপ্রার্থীর প্যানেল বাতিল করল কলকাতা হাই কোর্ট। আর সেই রায় ঘিরেই বৃহস্পতিবার সরগরম রাজ্য রাজনীতি। রায়ের পর দিনই নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, “বিচারব্যবস্থাকে শ্রদ্ধা করি। বিচারপতিরা আমার কোনো অনুষ্ঠানে এলে আমি তাদের সসম্মানে বরণ করি। কিন্তু একজন নাগরিক হিসেবে বলতেই হচ্ছে—এই রায় মানা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।”
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, আদালতের রায় নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর কথায়, “বলা হচ্ছে, চাকরি পেয়েছিলেন যারা, তাদের সুদ সহ টাকা ফেরত দিতে হবে। কিন্তু রায়ে কোথাও এমন বলা নেই। আমি নিজে রায় পড়ে শুনিয়েছি। কনক্লুশনের প্যারা ৪৯-এ বলা হয়েছে, যাদের চাকরি বাতিল হয়েছে, তারা ফের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বসতে পারবেন। এমনকি, বয়স ও অন্যান্য বিষয়ে ছাড় দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে সেখানে।”
মমতা বলেন, “আমাদের কাছে যদি তথ্য চাওয়া হতো, আমরা সেগুলো দিতে পারতাম। আত্মপক্ষ সমর্থনের একটা সুযোগ তো থাকা উচিত। এত ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ কী হবে? যারা স্কুলে পড়াচ্ছিল, সেই স্কুলগুলিরই বা কী হবে? গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। বাংলাকে বারবার টার্গেট করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “একই অপরাধে কজনকে শাস্তি দেওয়া যায়? তর্কের খাতিরে ধরেও নিন, কেউ দোষ করেছে। কিন্তু তার জেরে হাজার হাজার নির্দোষ চাকরিপ্রার্থী শাস্তি পাবে? মধ্যপ্রদেশের ব্যাপম কাণ্ডে তো ৫০ জনের বেশি মানুষ খুন হয়েছেন। শাস্তি হয়েছে কজনের? আমাদের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী এখনও জেলে। সেই নিয়েও আমরা কখনও কিছু বলিনি।”
সংবাদ সম্মেলনের শেষে মমতার স্পষ্ট বার্তা— “বিচারপতিদের প্রতি আমার সম্মান আছে, কোনো ব্যক্তি-বিশেষের বিরুদ্ধে কিছু বলছি না। কিন্তু রায়ের মানবিক দিকও আছে। আর সেই কারণেই বলছি, একজন নাগরিক হিসেবে এই রায় মানতে পারছি না।”