ধর্মযুদ্ধেই বিজেপি দল ভাঙ্গার চরম আশঙ্কা
দিলীপ চট্টোপাধ্যায়,মানুষের মতামত:পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ২৬-এর নির্বাচনকে বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারি ‘হয় এবার নয় নেভার’-এর জায়গায় নিতে যেতে চাইছেন। তৃণমূলকে হারাতে সাম্প্রদায়িক ও ধর্ম বিভাজনের রাজনীতিকেই তোল্লাই দিতে চাইছেন গেরুয়া শিবিরের হার্ড লাইনাররা। পশ্চিমবঙ্গে ২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে দুর্নীতি, বেকারি, লগ্নি, মূল্যবৃদ্ধি, কর্ম সংস্থান প্রভৃতি ইস্যু এই মুহুর্ত্যে পিছনের সারিতে। বিজেপির হিন্দুত্বের ধর্মযুদ্ধের মোকাবিলায় স্বাভাবিক ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্মনিরপেক্ষতা ও সংখ্যালঘু মুসলিমদের উন্নয়ন, নিরাপত্তাকে ইস্যু করে সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর ৩১ শতাংশ ভোটকে একত্রিত করার কৌশল নিয়েছেন।
বঙ্গে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে হার্ড লাইন হিন্দুত্ব রাজনীতিতে প্রভাব ফেলেছে সি পি এম সহ বাম শিবির, এস ইউ সি, লিবারেস্বহন, নানা নকশালপন্থী উপদল সহ অতি বামপন্থী শিবির এবং অবশ্যই কংগ্রেসের অভ্যন্তরে। পশ্চিমবঙ্গে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি, লালুপ্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল, আপ এবং শারদ পাওয়ারের এন সি পি অস্তিত্বহীন, কাগুজে দল হলেও তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নৈতিক সমর্থন দিতে চলেছেন। কংগ্রেসও পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে হারানোই মূল লক্ষ্য করে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছাকাছি যেতে চাইছে বলে রাজনৈতিক মহলের অনুমান।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপিতে বড় ধরণের ভাঙ্গনের ইঙ্গিত দিয়ে চলেছেন ফিরহাদ হাকিম, কুণাল ঘোষ, রবীন্দ্রনাথ ঘোষেরা। ফিরহাদ হাকিমের দাবি ৩৬ জন বিজেপি বিধায়ক দল ভেঙ্গে তৃণমূলে যোগ দেবেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারী বিরোধী দলের নেতার পদ খোয়াবেন। তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি ৪ সাংসদ, ১১ বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিতে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তাপসী মন্ডল তাঁর সূচনা মাত্র।
অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা, প্রাক্তন মন্ত্রী ও বর্তমানে কোচবিহার পুরসভার পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি ১১-১২ বিধায়ক বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসতে চাইছেন। এর মধ্যে কোচবিহারের ৩ জন বিজেপি বিধায়ক রয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের খবর, বিজেপির দুই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক ও জন বারলা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন বলে খবর।
শুভেন্দু অধীকারীরা অস্বীকার করলেও বিজেপির অভ্যন্তরেও খবর বেশ কয়েকজন বিজেপির বিধায়ক বিজেপি-তৃণমূলের ধর্মযুদ্ধের মধ্যেই নিজেদের আসন অনিশ্চিত হওয়ায় শেষ পর্য্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসকেই সেফ জোন বলে বেছে নিতে চাইছেন। শুধু তাই নয়, তৃণমূল-বিজেপির দ্বিমুখি ধর্মযুদ্ধে বাম-অতি বাম শিবির ও কংগ্রেসের একাংশ বিজেপিকে ঠেকাতে তৃণমূলে যোগদানের সক্রিয়তা শুরু করেছেন। তবে সিপিএম-কংগ্রেসের মধ্যে তীব্র তৃণমূল-মমতা বিরোধী একাংশ বিজেপিই তৃণমূলের বিকল্প বলে সেদিকে ঝুঁকতে চাইছেন।