NewsPolitics

যাদবপুরে ছাত্র আন্দোলনের আঁচ,শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে হামলা,পরিস্থিতি উত্তপ্ত

জিৎ দত্ত,মানুষের মতামত:যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিকে কেন্দ্র করে শনিবার সকাল থেকেই উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করে। বাম ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে আন্দোলন চলাকালীন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সভায় যোগ দিতে এলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মন্ত্রী সভাস্থলে পৌঁছাতেই বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। সভাস্থলে ঢুকে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি, স্লোগান ওঠে— ‘চোর-চোর’, ‘গো ব্যাক’!

শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি আটকে দিয়ে বিক্ষোভকারীরা তার বনেটে ‘ব্রাত্য বসু চোর’ লিখে দেন। শুধু তাই নয়, গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়, চাকায় চেয়ারের বাঁধন লাগিয়ে আটকে দেওয়া হয়। এমনকি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে থাকা পাইলট গাড়িগুলিরও কাচ ভাঙা হয়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে ব্রাত্য বসুকে সামনের গেট দিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, পিছনের গেট দিয়ে প্রবেশ করানো হয় এবং মঞ্চে ওঠানো হয়।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমার গাড়ি ঘিরে হামলা চালানো হয়েছে, কাচ ভাঙা হয়েছে। আমার উপরও হামলার চেষ্টা হয়েছে। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের অরাজকতা কাম্য নয়।”

এদিকে, বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর আন্দোলনের প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের অনুদান পায় না? তাহলে এখানে তৃণমূলপন্থীরা কেন ঢুকতে পারবে না?”

তিনি আরও বলেন, “আমরা আলোচনায় বসতে পারি, কিন্তু সময় দিতে হবে। তবে এখনই আলোচনা করব কিনা, তা নির্ভর করবে যেসব অধ্যাপক আজ হেনস্থার শিকার হয়েছেন, তাঁদের মতের ওপর।” প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা ওয়েবকুপার সদস্য ওমপ্রকাশ মিশ্র-সহ দুই অধ্যাপক তাঁদের হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও স্থায়ী উপাচার্য নেই, আর সেই প্রসঙ্গেও শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “স্বপ্নদীপের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের শাস্তি হবেই। যদিও প্রশাসনিক কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তবে বিচার হবে।”

এদিকে, যখন শিক্ষামন্ত্রী মঞ্চে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, তখনই এক গবেষক ছাত্র, সুমন্ত প্রামাণিক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন, যা নিয়ে নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর এই চরম অরাজক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা নিয়ে এখনো কোনো সরকারি ঘোষণা হয়নি। তবে শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এবং আন্দোলন আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Share with

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *