NewsPolitics

সাম্প্রদায়িকতার বিষ বাষ্পে দূষিত হয়ে উঠছে বাংলা?

 

দেবলীনা বোস,মানুষের মতামত:রামকৃষ্ণ,স্বামী বিবেকানন্দ,রবীন্দ্রনাথ- নজরুলের মতো ব্যক্তিত্বের জন্মস্থান বাংলা আজ সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার উদ্বেগজনক উত্থানের সাক্ষী। সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনা রাজ্যে ক্রমবর্ধমান বিভেদ ও অসহিষ্ণুতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।রীতিমতো সাধারণ শান্তিপ্রিয় সংস্কৃতি মনা বাঙ্গালীদের কপালে ভাজ ফেলেছে!রাজ্যে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক কিছু ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে তা দেখিয়ে দিচ্ছে!বেলডাঙ্গায় দুর্গা পুজোকে কেন্দ্র করে দাঙ্গা লাগানোর জন্য শাওন হালদার নামে এক তরুণ কে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০ বছর বয়সী ধৃত শাওন কৃষ্ণনগর পলিটেকনিক কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।বাড়ি বেলডাঙা থানার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে।অন্যদিকে আবার হরিণঘাটার দাসপোলডাঙা প্রাথমিক স্কুলে সরস্বতী পুজো করা যাবে না বলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বদলির হুমকি দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়। বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর পোস্ট করা ভিডিওটিতে অভিযোগ করা হয়েছে যে হুমকি এসেছে তৃণমূলের বুথ সভাপতি আলিমুদ্দিন মণ্ডলের কাছ থেকে।যদিও তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব মণ্ডলের সঙ্গে কোনরকম দলীয় যোগের কথা অস্বীকার করেছেন। যোগেশ চন্দ্র ল কলেজের ছাত্রী দেশমা ঘোষ বলেন, “আমরা প্রতি বছর এই কলেজে সরস্বতী পূজা করি। এ বছর ২৯শে জানুয়ারি পূজার প্রস্তুতি শুরু করার সময় স্থানীয় গুণ্ডারা আমাদের ক্যাম্পাসে প্রাণনাশ ও ধর্ষণের হুমকি দেয়। তারা কলেজের ছাত্র ছিল না। তারা বলেছিল যে পূজা উদযাপন করা যাবে না। স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করা আমাদের অধিকার।তাই আমাদের হাইকোর্টে যেতে হয়েছিল।হাইকোর্টের আদেশে আমরা নিশ্চিন্ত হতে পেরেছি।”

উল্টোদিকে আবার নদীয়ার চাপরা থানার অন্তর্গত কলিঙ্গ নামক একটি এলাকায় সরস্বতী মূর্তি ভেঙে চক্রান্ত করে দাঙ্গা লাগানোর ষড়যন্ত্রের দায়ে চার ব্যক্তি,মানিক ঘোষ,প্রসেনজিৎ ঘোষ,দেবাশীষ ঘোষ এবং পিন্টু ঘোষকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে পাশাপাশি এদিন মুর্শিদাবাদের কাশিমগঞ্জ বাজারের এক কালী মন্দিরে লাথি মেরে প্রতিমা ভাঙচুর করল তাপস মন্ডল নামের এক ব্যক্তি। এতসব ঘটনার মাঝে এদিন আবার রানাঘাটের লোকাল ট্রেনে পায়রাডাঙ্গা থেকে মদনপুর পর্যন্ত এই লোকাল ট্রেনে বিভিন্ন কটুক্তি ও মব লিঞ্চিং -এর বিষাক্ত অভিজ্ঞতার শিকার হতে হল এক তরুণ-যুবক রেজাউল ইসলামকে,অন্যায় তার পরনে ছিল পাঞ্জাবী-পাজামা ও টুপি।

এইসব অনভিপ্রেত ঘটনাগুলি রাজ্যে ক্রমবর্ধমান সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও বাঙালিদের মধ্যে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।এইতো মাত্র ১০ থেকে ১৫ বছর আগেও যেখানে পুজো এবং ঈদ পারস্পরিক উৎসাহ ও শ্রদ্ধার সাথে পালন করা হতো সেখানে আজকাল প্রতিটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং উত্তেজনা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেখা যাচ্ছে যা খুবই উদ্বেগজনক।আমরা বাংলার সাধারণ মানুষ ও যুবসমাজ মন্টু প্রসেনজিৎ তাপস এবং আলিমুদ্দিনের মত বাঙালিরাও কি বিদ্বেষ পোষণকারীদের বিভেদমূলক মতাদর্শের শিকার হচ্ছি?এবার সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন সুস্থ সমাজের বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন বাঙালিরা!

Share with

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *