বারুইপুরে পার্টি অফিসে শূন্যে গুলি,বিতর্কে বিজেপির যুবনেতা
ইয়ামুদ্দিন সাহাজী,মানুষের মতামত:বারুইপুরে বিজেপির পার্টি অফিসে প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন ঘিরে বড়সড় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে বন্দুক থেকে গুলি ছোড়ার ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়। এই ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন বিজেপি যুব মোর্চার যাদবপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মলয় চ্যাটার্জি।
২৬ জানুয়ারি বারুইপুর নগরমণ্ডলের উদ্যোগে আয়োজিত প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব ও কর্মীরা। সেখানে মঞ্চের ওপর দাঁড়িয়ে মলয় চ্যাটার্জিকে বন্দুক হাতে শূন্যে গুলি চালাতে দেখা যায়। মুহূর্তেই সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।
এই ঘটনার পর মলয় চ্যাটার্জি দাবি করেন, “এটি কোনো আগ্নেয়াস্ত্র নয়, বরং একটি এয়ারগান, যা মেলায় বেলুন ফাটানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।” তিনি আরও বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে মানিকচক, বৈষ্ণবনগর বা ইংরেজবাজারের ঘটনার তুলনা করা অনুচিত। আমরা ভারতীয় জনতা পার্টির সৈনিক, আমাদের উদ্দেশ্য কখনোই কাউকে ভয় দেখানো নয়। ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের বীর শহীদদের প্রতি সম্মান জানাতেই আমরা এই কাজ করেছি। এটাকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে বিতর্ক তৈরি করতে ব্যবহার করা হচ্ছে। ভয় দেখানো আমাদের কাজ নয়, তা তৃণমূল কংগ্রেস করে।”
এই ঘটনার পর বিরোধী দলগুলোর তরফে বিজেপির বিরুদ্ধে কটাক্ষ শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দোহাই দেওয়া বিজেপি কি নিজেরাই আইন মানে না? জনসমক্ষে বন্দুক প্রদর্শন এবং শূন্যে গুলি চালানো কি আইনসম্মত?” তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে।
এই ঘটনায় প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া কী হবে, সে দিকেই এখন নজর রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবি ও ভিডিও ইতিমধ্যেই পুলিশের নজরে এসেছে বলে জানা গেছে। যদি এটি বাস্তব আগ্নেয়াস্ত্র হয়, তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন এমন ঘটনার পর বিজেপির অন্দরেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ একে ‘নিরীহ ঘটনা’ বলে উড়িয়ে দিতে চাইছেন, আবার কেউ মনে করছেন, এটি অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক তৈরি করেছে, যা দলের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
এই ঘটনায় প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।