InternationalNews

ট্রাম্পভয়েই ফ্যাক্ট-চেকিং-এ জাকারবার্গের ইউটার্ন? 

স্টাফ রিপোর্টার,মানুষের মতামত: কিছুদিন পরেই দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার আগে অনেকটা হুট করে ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে কনটেন্ট-মডারেশনের নীতিমালায় বড় পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়েছেন মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ।

শুধু ফ্যাক্ট-চেকিং নীতিমালার পরিবর্তনই নয়,মেটার বোর্ডে ডানা হোয়াইট নামে ট্রাম্পের একজন ঘনিষ্ঠ মিত্রকেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অনেকের মতে,জাকারবা র্গের এই সিদ্ধান্ত নতুন মার্কিন প্রশাসনের চাপের প্রতিফলন।
পরিবর্তনের প্রেক্ষাপট
অতীতে ফেসবুককে ‘জনগণের শত্রু’ আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, জাকারবার্গ যেন বাকি জীবন কারাগারে কাটান,তা তিনি নিশ্চিত করবেন। শুধু মেটা সিইও নন,অ্যাপলের টিম কুক থেকে ওপেনএআই-এর স্যাম অল্টম্যান পর্যন্ত অনেকেই ট্রাম্পের সমর্থনে কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন।অ্যামাজন আসন্ন ফার্স্ট লেডিকে নিয়ে চার কোটি ডলার ব্যয়ে একটি বায়োপিক নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে।
মুক্ত মতপ্রকাশের গুরুত্ব তুলে ধরে জাকারবার্গ বলেছেন, অতীতে ফেসবুকের কঠোর নীতিমালার কারণে অনেক সঠিক তথ্যও অবরুদ্ধ হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ,হান্টার বাইডেন সম্পর্কিত সঠিক একটি খবর ফেসবুক ব্লক করেছিল,যা পরে সত্য প্রমাণিত হয়।
মেটার নতুন নীতিমালা অনুযায়ী,ব্যবহারকারীদের মতামত যাচাইয়ের জন্য ‘কমিউনিটি নোট’ ব্যবহার করা হবে এবং বিতর্কিত বিষয়গুলোর ওপর বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে।
ঝুঁকি এবং সমালোচনা
জাকারবার্গ নিজেই স্বীকার করেছেন, নতুন নীতিতে আরও ‘খারাপ জিনিস’ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এর ফলে বিজ্ঞাপনদাতা এবং ব্যবহারকারীদের প্রতিক্রিয়া নেতিবাচক হতে পারে।
পাশাপাশি, অবৈধ কনটেন্ট রোধে যথাযথ উদ্যোগ না নেওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ইলন মাস্কের মালিকানাধীন এক্সের (সাবেক টুইটার) শিথিল নীতিমালার কারণে যুক্তরাজ্যে সাম্প্রতিক দাঙ্গার সময় সহিংস পোস্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল, যা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
মেটার ওভারসাইট বোর্ড কনটেন্ট-মডারেশন নীতিমালার এই পরিবর্তনকে প্রথমে সমর্থন জানালেও পরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বোর্ডের মতে, কনটেন্ট-মডারেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নেওয়া উচিত, কেবল একজন নির্বাহীর সিদ্ধান্তে নয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মেটার এই পরিবর্তন মুক্ত মতপ্রকাশের পথে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে অবৈধ কনটেন্ট দমন এবং ব্যবহারকারীদের স্বাধীন মতপ্রকাশের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। নিয়ম প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এই ভারসাম্য বজায় রাখার অন্যতম উপায় হতে পারে।
Share with

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *