জেলেই অনশনে একদা মাওবাদী অর্ণব
নিজস্ব প্রতিবেদক,মানুষের মতামত:অসুস্থ মা-কে দেখতে যেতে যাওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেনি কারা দফতর। তাই এবার অনশন শুরু করেছেন বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে থাকা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত একদ মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম (Arnab Dam)।
একটি পোস্টার বুকে ও পেটে লাগিয়ে বুধবার রাত থেকে তিনি বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পোস্টারে “বিপদে আমি না যেন করি ভয়/করিতে পারি জয়” – এই কথা লেখা আছে বলে জানা গিয়েছে। অর্ণব দামের অনশন শুরু নিয়ে কারা দপ্তরকে রিপোর্ট পাঠিয়েছে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।
২০১০ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম মেদিনীপুরের শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে মাওবাদী হামলা হয়। সেই হামলায় ২৪ জন ইএফআর জওয়ানের মৃত্যু হয়। জওয়ানদের পাল্টা প্রতিরোধে ৫ মাওবাদীও মারা গিয়েছিলেন। শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে হামলা চালানোর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে চিহ্নিত করা মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম ওরফে বিক্রমকে। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি তাঁর সাজা ঘোষণা হয়। তার পর থেকে প্রথমে পশ্চিম মেদিনীপুর জেল পরে হুগলির চুঁচুড়ার সংশোধনাগার। জেলবাসের মধ্যেই ইন্দিরা গান্ধী ওপেন ইউনিভার্সিটি (ইগনু) থেকে ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হন অর্ণব। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে PHD করার জন্য অর্ণব দামের এখন ঠিকানা বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার।
বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে অর্ণব দামের অনশন শুরু করার প্রসঙ্গে মানবাধিকার সংগঠন APDR-এর দাবি, অর্ণবের মা অসুস্থ কিনা তা জানতে রাত ১ টার সময় সুভাষগ্রামে তাঁদের বাড়িতে গিয়েছিল সোনারপুর থানার পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে ওখানকার পুলিশ সুপার ও স্বরাস্ট্র সচিবকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক রঞ্জিত শূর বলেন, “রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্যই অসুস্থ মাকে দেখতে যেতে চাওয়া অর্ণবকে এক দিনের প্যারোল দেওয়া হচ্ছে না। অর্ণবের পড়াশুনা করার পরিবেশও বর্ধমান সংশোধনাগারে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডির কোর্সের গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস করতে যেতে দেওয়া হয়নি ওকে। অসুস্থ মাকে দেখতে যেতে দেওয়ার প্যারোলের দাবিতেই অর্ণব এখন অনশন শুরু করেছেন।” যদিও রঞ্জিত শূরের আনা প্রতিহিংসার অভিযোগ মানতে চাননি তৃণমূলের রাজ্য নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “সরকার সহানুভূতিশীল। তাই অর্ণবের পিএইচডি করার জন্য সবরকম সহযোগিতা করেছে। কেন প্যারোল পেল না, তা আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”